তাজবীদের পরিচয়
তাজবীদের শাব্দিক অর্থঃ
تجويد শব্দটি হলো মাসদার। এর অর্থ সুন্দর
করা।
তাজবীদের পারিভাষিক অর্থ
পরিভাষায় তাজবীদ হলো হরফ সমূহকে হক অনুযায়ী আদায় করা। এবং
প্রতিটি হরফ মূল মাখরাজ এবং সিফাত অনুযায়ী আদায় করা, তার সমকক্ষ হরফের সাথে তাকে যুক্ত করা, শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করা, সাধ্যমত পরিপূর্ণরূপে আদায় করা, কোনো রকম কম-বেশি, বাড়াবাড়ি এবং লৌকিকতা ছাড়া তা আদায় করা। ইলমে কিরাআতের পরিভাষায় তারতীল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করাকে
তাজবীদ বলে। আর যে নিয়ম-নীতি কিংবা বিধি-বিধান অধ্যয়ন করলে তারতীলের বিধান ও
নিয়ম-নীতি সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়- তাকে ইলমে তাজবীদ বলে।
তাজবীদের গুরুত্ব
আল্লাহ তা’আলা তাঁর
মর্যাদাপূর্ণ কিতাব কুরআনকে তারতীলের সাথে তিলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ
সম্পর্কে তিনি কুরআনে ইরশাদ করেন- ورتل القرآن
ترتيلا-অর্থঃ তোমরা তারতীল
সহকারে কুরআন তিলাওয়াত করো। (সূরা মুযযাম্মিল-৪) উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা’আলা তারতীলের সাথে কুরআন তিলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
অতএব তারতীলের সাথে কুরআন তিলাওয়াত করা ফরযে আইন। আর তারতীল বলা হয় আরবী
প্রত্যেকটি হরফকে তার নির্দিষ্ট মাখরাজ থেকে সিফাত অনুযায়ী যথাযথভাবে আদায়
করাপূর্বক উচ্চারণ করাকে। সাহাবী আলী
রাযি. উক্ত আয়াতের তাফসীরে বলেন-
তারতীল অর্থাৎ অক্ষর সমূহ সুন্দর করে আদায়
করা,
ওয়াকফের স্থান সমূহ জানা, আর ওয়াকফ হলো ওই সকল উত্তম স্থান- (আয়াতের শেষ স্থান)
যেখানে শ্বাস ফেলা হয়। এ বিষয়ে কোনো
সন্দেহ নেই যে, কুরআন শুদ্ধ করে পড়ার দ্বারা মুসলমান
ইবাদতকারীরূপে গণ্য হয়। যথা- সে ইবাদতকারীরূপে গণ্য হয় কুরআনের অর্থের বিষয়ে
চিন্তা করা দ্বারা এবং কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠা করার দ্বারা। এজন্যই আলিমগণ তাজবীদ ছাড়া পড়াকে ভুল (লাহন) বলে গণ্য
করেছেন। আর যে এভাবে পড়ে- তাকে লাহনকারী বলেছেন। লাহনকে তারা দুই ভাগে ভাগ করেছেন।
جلي (জালি) এবং خفي (খফী)। জালি হলো- প্রকাশ্য ভুল- যা
সাধারণ মানুষ এবং কুরআনের আলিম সকলেই বুঝতে পারেন। যথা- হরকত বা হরফ পরিবর্তন করে
পরা।
অপরদিকে খফী হলো- তিলাওয়াতের সৌন্দযের্র
বিষয়ে ভুল করা- যা শুধুমাত্র কুরআনের আলিম এবং ইমামগণই বুঝতে পারেন। যথা- ر কে তাকবীর করে পড়া এবং হরকতের স্থানে
থামা ইত্যাদি।
তাজবীদ শিক্ষা করার বিধান
হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ. বলেন- তাজবীদ শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিমের ওপর ফরয। কেননা কুরআন
আরবী ভাষায় নাযিল হয়েছে। আর কুরআন আরবী ভাষায়ই তিলাওয়াত করা ফরয। আর তাজবীদ শিক্ষা
করা ছাড়া আরবী ভাষার সঠিক ও যথাযথ উচ্চারণ সম্ভব নয়।
সুতরাং তাজবীদ শিক্ষা করা ফরয। প্রত্যেক হরফকে তার মাখরাজ (উদয়স্থল) থেকে উচ্চারণ এবং
সিফাতসমূহ যথাযথ ভাবে আদায় করার নাম তাজবীদ। যে স্থান থেকে হরফ উচ্চারিত হয়- তাকে
মাখরাজ বলা হয়। আর আরবী হরফের মাখরাজ সর্বমোট ১৭টি। অপরদিকে যে অবস্থা ও পদ্ধতিতে হরফ উচ্চারিত হয়- তাকে সিফাত
বলে। সিফাত দুই প্রকার।
প্রথমতঃ ওই সিফাত- যা
অনুসরণ না করলে হরফই বদলে যায়। এমন সিফাতকে সিফাতে যাতিয়া (সত্তাগত গুণ) কিংবা
সিফাতে লাযিমা (আবশ্যকীয় গুণ) বলে।
দ্বিতীয়তঃ ওই সিফাত- যা আদায় না করলে হরফ ঠিক থাকে বটে, কিন্তু তিলাওয়াতের সৌন্দর্য এবং মাধুর্য্যতা নষ্ট হয়ে যায়।
এমন সিফাতকে সিফাতে আরিযা (সৌন্দর্যদায়ক গুণ) বলে।
তাজবীদ বিষয়ক বইয়ের পিডিএফ পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
📚📖📘📚📖📘📚📖📘📚📖📘📚📖📘📚📖📘📚📖📘📚📖📘📚📖📘📚📖📘
আমার প্রিয় বাংলা বই হোয়াইটসআপ গ্রুপে যুক্ত হতে এখানেক্লিক করুন, টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং ফেইসবুক গ্রুপে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
No comments:
Post a Comment
আমার প্রিয় বাংলা বই-এর যে কোন লেখাতে যে কোন ত্রুটি বা অসংগতি পরিলক্ষিত হলে দয়া করে আমাদের লিখুন।