লিখেছেনঃ
কহিনুর হাসান সাদিয়া
আসসালামু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
ছবিটি দেখেই বুঝতে পেরছেন যে, আমি
আজ কি বিষয়ে কথা বলবো?
প্রথমে ইকটু বলতে চাই আরিফ আজাদ স্যারের বই
আমি কখন থেকে পড়ি এবং কোন বইটি পড়ে আমার প্রথম বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
আমি একজন ছোট্ট পাঠক। আমার মনে হয় না যে আমার
চেয়ে ক্ষুদে পাঠক এই গ্রুপে আর কেও আছে। মাত্র দশম শ্রেণির ছাত্রী।
মাদরাসা জীবনে এসেছি এই তো কিছুদিন হয়। ৪ বছর
হয় আমি মাদরাসায় পড়ি। এর আগে ছিলাম উন্মুক্ত খোলা মেলা পরিবেশে। যাক আলহামদুলিল্লাহ
আল্লাহ হেদায়াত দিয়েছেন।
তখন ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস চলে। আমি তখন
আলিয়া তে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আর কওমিতে ছিলাম মিযান জামাতের ছাত্রী। তো আমি
আলিয়ার আরবী ১ম ও ২য় পত্র একটা আপুর কাছে পড়তাম যার নাম ছিলো তাসলিমা আক্তার।
একদিন আমি বিকেলে তার কাছে পড়তে যাই। আর গিয়ে সালাম দিয়ে দেখি, তিনি
বিছানায় বসে "বেলা
ফুরাবার আগে" বইটি পড়ছেন। আমি সালাম দিয়ে অন্য কোনো কথা না বলেই প্রথমে
জিজ্ঞাসা করলাম বইটির ব্যাপারে.....
আমিঃ আপু?
এটা
কি বই?
আপুঃ এটি এবারের বইমেলার বেস্ট সেলার বই।
আমিঃ তাই নাকি আপু! আচ্ছা, আপু
এই বইটি কোথায় পাবো? আপু বইটির প্রচ্ছদ কত্তো
সুন্দর তাই না? আপু আমি আরো বই দেখেছি
পরেছি তবে এত্তো সুন্দর প্রচ্ছদের বই আগে কোথাও কেনো দেখিনি? আপু
বইটি কে কিনেছে? আপনি কি কিনেছেন? কোথা
থেকে কিনেছেন? আপু আমি কিনবো? কিন্তু, এত্তো
টাকা তো নেই আমার কাছে? (আমি অষ্টম শ্রেণিতে থাকা
অবস্থায় মজা খাওয়ার জন্য পুরো দিনে ১০ টাকার বেশি পেতাম না) তবুও, আমি
কিনবো? আপু আমাকে নিয়ে যাবেন?
আপুঃ স্তব্ধ দৃষ্টিতে করুণ চাহুনিতে তাকিয়ে আছেন
আমার দিকে। তাকিয়ে তো থাকার কথা! একসাথে এক মুঠো প্রশ্ন যে ছুঁড়ে দিয়েছি। আপু
বললেন, বই আমার ভাইয়া এবার বইমেলা থেকে কিনেছে। ঘুরতে গিয়েছিলো
বন্ধুরা মিলে আর এই বই সাথে কিনে নিয়ে এসেছে। হ্যাঁ, প্রচ্ছদ
কুব সুন্দর। এটা আমাদের এলাকাতে পাওয়া যাবে না। আচ্ছা, আমি
আসছি পড়তে বসো।
আমিঃ পড়তে না বসে "বেলা ফুরাবার আগে" বইটি অর্ধেকাংশ পড়ে
ফেলেছি।
এই ছিলো আমার বইয়ের প্রতি ঝোঁকার প্রথম দিন।
তারপর এই বইকে খুব খুঁজেছি। কিন্তু,
পাইনি।
বড্ড ছোট ছিলাম তখন নেট সাইটে ছিলাম না। ফেসবুক জানতাম যে আছে। কিন্তু, নিজের
একাউন্ট খোলার সাহস কখনো হয়ে উঠেনি।
তো আজকের আমি আর আগের আমি অনেক চেঞ্জ
আলহামদুলিল্লাহ। আমি এই বই পাগলি হওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ ১০টি বই কিনেছি আর ২৩টি
বই হাদিয়াই পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। হাদিয়া পাওয়ার মধ্যে আরিফ আজাদ স্যারের
সম্পাদিত ও নিজের লেখা মোট ৭টি বইও আলহামদুলিল্লাহ।
আজ "প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ" বইটি বুকশেলফ থেকে নামিয়ে
পড়তে বসেছি। বইয়ের প্রথম পেইজে লেখা "২০১৭-২০১৮ সালের রকমারি ডটকম বেস্ট–সেলিং
বই। তারপর প্রকাশকের কথা পড়লাম। তারপর স্যারের মানে লেখকের কথা পড়লাম। তারপর পাঠক
প্রতিক্রিয়া পড়লাম তারপর সূচিপত্র দেখলাম। তারপর আসলাম মূল আলোচনায়।
"একজন অবিশ্বাসীর
বিশ্বাস" এই গল্পটি পড়লাম। যেহেতু,
ছোট
মানুষ তাই একেকটা লাইন বুঝতে অনেকটা সময় লাগে। তাই আমি একেকটি লাইনকে ২ থেকে ৩ বার
করেও পড়ছি। মাশাআল্লাহ বিজ্ঞান দ্বারা খুব সুন্দর উদাহরণ দিয়ে বইটি লিখিত বোধ হয়।
প্রথম গল্পটি পড়ে যতটুকু উপলব্ধি করতে পারলাম আর কি। তো শেষ যেই উদাহরণটা দেওয়া
হয়েছিলো, মা-বাবা বিষয়ক। আসলে
উদাহরণ এতটাই যুক্তিসঙ্গত হয়েছে যে,
আমি
যে এর প্রশংসা কোন ভাষায় প্রকাশ করবো বুঝে উঠতে পারছি না। সত্যিই স্রষ্টার প্রতি
বিশ্বাসকে কখনোই কোনো প্রশ্ন করা যায় না। সন্দেহ করা যায় না। এটাকে মনের গভীর
অন্তস্থল থেকে ধারণ করতে হয়। আর এর নামই "বিশ্বাস"।
আমার সব সময়ের একটা অভ্যাস। কোনো পড়া যদি আমি
মুখস্ত করি বা পড়ি সেটা আম্মুকে না বলা পর্যন্ত আমার শান্তি নেই। পড়া মুখস্থ করার
পর আম্মুকে সেই পড়া না দিলে আমার সেই পড়া পুরোপুরিভাবে মুখস্থ হয় না। তাহলে, এবারও
তার ব্যতিক্রম কেনো হবে?
আমি "একজন বিশ্বাসের বিশ্বাস" গল্পটি পড়ে আম্মুর কাছে গিয়ে গল্পটি সম্পর্কে সারসংক্ষেপ বললাম। খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে বললাম, পেছনে ফিরে দেখি আব্বুও শুনছিলো। অতঃপর বড্ড লজ্জা পেলাম।
- আরজ আলী সমীপে
- জীবন যেখানে যেমন
- নবি-জীবনের গল্প
- প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদঃ ১
- প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদঃ ২
- প্রত্যাবর্তন
- বেলা ফুরাবার আগে
- মা মা মা এবং বাবা
- সত্য কথনঃ ইসলাম বিদ্বেষীদের বিভ্রান্তির জবাব
No comments:
Post a Comment
আমার প্রিয় বাংলা বই-এর যে কোন লেখাতে যে কোন ত্রুটি বা অসংগতি পরিলক্ষিত হলে দয়া করে আমাদের লিখুন।