আলী আহমাদ মাবরুরঃ বেশ কিছু সম্প্রদায় আছে যারাও ইমাম মাহদি তত্ত্বকে ব্যবহার করেছে। আবার ব্যক্তি পর্যায়েও অনেকে করেছে। আমরা তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিটির কথাই বলবো। ইমাম মাহদির দাবিদার এই ব্যক্তি ১৮৫০ সালে ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম ছিল মির্জা গোলাম আহমাদ। তিনি কাদিয়ান প্রদেশে জন্ম নেয়ায় তার নামের শেষে পরবর্তীতে কাদিয়ানি শব্দটাও যুক্ত করা হয়।
এই মানুষটি তার জীবদ্দশায় মুল ধারার ইসলাম
থেকে পুরোপুরি ভিন্ন একটি ধর্মতাত্ত্বিক বয়াণ হাজির করেন। তিনি শুরুতে যে দাবি
করেছিলেন পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে তিনি নিজেকে তার চেয়ে উচ্চতম স্থানে দাবি করতে
থাকেন। প্রথমে তিনি নিজেকে মুজাদ্দিদ দাবি করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি এতে সন্তুষ্ট
থাকেননি। পরবর্তী সময়ে তিনি নিজেকে ইমাম মাহদি হিসেবে দাবি করতে শুরু করেন। এরপর
হঠাৎ করেই তিনি নিজেকে মসীহ হিসেবে দাবি করেন। আর একেবারে চুড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে
তিনি নিজেকে নবি বলেও দাবি করেন।
তার কাহিনী আমরা সবাই কম বেশি জানি। সমসাময়িক
যত বড়ো আলেম বা ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন, সবাই তার এসব দাবিকে উদ্ভট হিসেবে
আখ্যায়িত করে প্রত্যাখান করেন। এর মধ্যে একজন ছিলেন তৎকালীন সময়ের ভারতবর্ষের
প্রসিদ্ধতম আলেম ও শায়খুল হাদিস শায়খ সানাউল্লাহ অমৃতসারী। তিনি প্রকাশ্যে মির্জা
কাদিয়ানির সাথে একটি অভিশাপ (মুলাআনা) প্রদান করেন । তিনি সেই চ্যালেঞ্জ দিয়ে
অভিশাপ দেন এবং বলেন,
“আমরা দুজন কথা বলবো এই বিশ্বাস নিয়ে যে, আমাদের
মধ্যে যে মিথ্যা বলবে আল্লাহ তার ওপর লানত বর্ষন করবেন। আমাদের মধ্যে যিনি মিথ্যা
বলবেন, তিনি সত্যবাদি ব্যক্তির আগে মারা যাবে।’
এই অভিশাপ দেয়ার এক বছরের মধ্যেই মির্জা
কাদিয়ানি ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হন এবং পরবর্তীতে তার খুবই করুণ মৃত্যু
হয়। তার অনুসারীরা অবশ্য তার মৃত্যুর পরও তাদের আদর্শের প্রচার করে যাচ্ছে।
(প্রকাশিত গ্রন্থ: কারবালা, ইমাম মাহদি, দাজ্জাল ও গাজওয়ায়ে হিন্দ থেকে)
প্রকাশনায়: প্রচ্ছদ প্রকাশন - Prossod Prokashon
No comments:
Post a Comment
আমার প্রিয় বাংলা বই-এর যে কোন লেখাতে যে কোন ত্রুটি বা অসংগতি পরিলক্ষিত হলে দয়া করে আমাদের লিখুন।