কুরআন সুন্নাহ পরিষদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি - আমার প্রিয় বাংলা বই

সাম্প্রতিকঃ

Post Top Ad

Responsive Ads Here

September 08, 2022

কুরআন সুন্নাহ পরিষদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি


 

মানুষের পরিচয়
আমরা মানুষসৃষ্টির সেরা জীব-আশরাফুল মাখলুকাত। মহান আল্লাহ্ অসংখ্য ছোট-বড় সৃষ্টির মধ্যে মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। সব সৃষ্টিকে তিনি একটি নিয়মের অধীন করে দিয়েছেন। কিন্তু মানুষকে তিনিই ইচ্ছার স্বাধীনতা দিয়েছেন। মানুষ যা চায় তা-ই করতে পারে। এ বড় মর্যাদার সাথে তিনি মানুষকে করেছেন খলিফা বা তাঁর প্রতিনিধি। মানুষ সৃষ্টির আগে তাই তিনি ফেরেশতাদের ডেকে বললেন আমি পৃথিবীতে আমার খলিফা বা প্রতিনিধি নিযুক্ত করব। খলিফার কাজ হচ্ছে তার নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা এবং যার প্রতিনিধি তার কাছে হিসাব দেয়া।

জীবন বিধান ইসলাম
আল্লাহ মানুষকে দুনিয়ায় পাঠালেন। সাথে দিলেন তাঁর পক্ষ থেকে হেদায়াত। মানুষ যাতে তাঁর দেয়া হেদায়াত ভূলে পথভ্রষ্ট হয়ে না যায় সে জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যুগে যুগে প্রেরণ করেন অসংখ্য নবী-রাসূল। আল্লাহর সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সা.। তিনি খাতামুন্নাবিয়্যীন সাইয়েদুল মুরসালীন। তাঁর পরে আর কোন নবী আসবেন না। তিনি মানুষের কাছে নিয়ে এসেছেন আল্লাহর সর্বশেষ গ্রন্থ পবিত্র আল কুরআন। কুরআন মানুষের জন্য হেদায়াত গ্রন্থ। আর আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য জীবন ব্যবস্থা হচ্ছে কেবলমাত্র ইসলাম। রাসূল সা. আল্লাহর মনোনীত জীবন ব্যবস্থা ইসলামকে পরিপূর্ণতা দান করেছেন। আল্লাহ বলেছেন আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণতা দান করলামআর আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি পূর্ণ করলামআর ইসলামকে তোমাদের জন্য জন্য জীবন ব্যবস্থা হিসাবে গ্রহণ করলাম। (আল মায়দাঃ৩)

মুসলমানের পরিচয়
ইসলাম অর্থ আত্মসমর্পণ। তাই মানুষের মধ্যে যারা এই ইসলামকে কবুল করে বা আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণ রূপে আত্মসমর্পণ করেতাদের বলা হয় মুসলিম
কেবলমাত্র মুসলমানের ঘরে জন্ম নিলেই কেউ মুসলমান হয় নাবরং কাফের মুশরিকের ঘরে জন্ম নিয়েও যদি কেউ ঈমান আনে এবং ইসলামের সব বিধি বিধান মেনে বলে তবে সেও মুসলিম। মানুষের মধ্যে মুসলিমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। কুরআনের ভাষায় তোমরা শ্রেষ্ঠজাতিমানুষের কল্যাণের জন্যই তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছেতোমরা সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে” (আল ইমরানঃ ১১০)। অন্য স্থানে বলা হয়েছে তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী জাতি হিসাবে সৃষ্টি করা হয়েছে যেন তোমরা মানুষের কাছে সত্যেও সাক্ষ্য হতে পার। (আল বাক্বারাঃ ১৪৩) কিন্তু আজ মানুষ ভূলে গেছে তার পরিচয়। মুসলমান ভূলে গেছে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। জলে স্থলে সর্বত্র চলছে অনাচারঅবিচার ও অশান্তির প্রবল ¯্রােত।

সংগঠনের গুরুত্ব
মুসলমানের জীবন সুবিন্যস্ত ও সুসংঘবদ্ধ জীবন। বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করার কোন সুযোগ ইসলামে নেই। আল্লাহ বলেন তোমরা সংঘবদ্ধ ভাবে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না” (আল ইমরানঃ ১০৩)। আর সংঘবদ্ধ জীবন যাপন আল্লাহ প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ্ তো ভালবাসের তাদেরই যারা তাঁর পতে সংগ্রাম করে সংসংঘবদ্ধ হয়ে এমন ভাবে যেন তারা একিট সীসাঢালা প্রাচীর” (আস সাফঃ ৪)। তাই রাসূল সা. এর সুস্পষ্ট নির্দেশ সংগঠনকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর এবং দল ভাঙ্গার কাছেও যেও না। হযরত উমর রা. এর ঘোষণা দল ছাড়া ইসলাম হয় না।  তাইতো রাসূল সা. এবং সাহাবায়ে কিরাম রা. এর জীবন সুসংঘবদ্ধ ও দলবদ্ধ জীবন যাপনের সুস্পষ্ট নমূনা।
বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ আল্লাহ প্রদত্ত হেদায়াতরাসূল সা. এর তরীকা অনুসরণের নিমিত্তে এবং সর্বোপরি একজন মানুষকে আল্লাহর খলিফা তথা খাঁটি বান্দা হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাতারের প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তাই বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রিয় সংগঠন। বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদের আক্বীদা-বিশ্বাসলক্ষ্য-উদ্দেশ্যকর্মসূচী-কর্মনীতি এবং সামগ্রিক কার্যক্রম আল্লাহর বিধান এবং রাসূল সা. এর তরীকার সুস্পষ্ট প্রতিফলন।

পরকালে জবাবদিহি
সব মানুষকেই মরতে হবে। ফিরে যেতে হবে মহান আল্লাহর কাছে। কিয়ামতের প্রবল প্রলয়ে সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে মানুষের ভাল মন্দের বিচারের সময় এসে যাবে। সেদিন অবশ্যই মানুষকে দুনিয়ায় থাকা অবস্থায় তার ভূমিকা ও কাজ সম্পর্কে জবাব দিতে হবে। অতঃপর যার পাল্লা ভারী হবে সে পছন্দমত সুখে থাকবে এবং যার পাল্লা হালকা হবে হাবিয়া’ হবে তার আশ্রয়স্থল” (আল ক্বারীয়াঃ ৬-৯)।

মৌলিক আক্বীকা
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” - আল্লাহ  ছাড়া কোন ইলাহ নাইমুহাম্মদ সা. আল্লাহর রাসূল।

➧মৌলিক আক্বীদার দাবী অনুযায়ি পরিষদ বিশ্বাস করেঃ
➧আল্লাহ পাক মানব জাতির একমাত্র রব ও হুকুমকর্তা।
➧বিশ্বনবী সা.-ই মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে একমাত্র আদর্শ।
➧কুরআন সুন্নাহ্ই একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।
➧সাহাবায়ে কিরাম রা.-ই নবী সা. এর আনুগত্যের একমাত্র আদর্শ নমূনা।
➧আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতের মুক্তিই একমাত্র চূড়ান্ত লক্ষ্য।

আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যঃ
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশীদের ভিতর ইসলামের প্রচারইসলামের আলোকে চরিত্র সৃষ্টি এবং বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ ও শান্তির পরিবেশ সৃষ্টিতে সহযোগিতা করাই বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ্ পরিষদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য।

আমাদের দাওয়াতঃ
একঃ সাধারণভাবে সকল মানুষ ও বিশেষভাবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আল্লাহর দাসত্ব ও রাসুল সা. এর আনুগত্য করার আহবান।
দুইঃ ইসলাম গ্রহণকারী ও ঈমানের দাবীদার সকল মানুষের প্রতি বাস্তব জীবনে কথা ও কাজের গরমিল পরিহার করে খাঁটি ও পূর্ণ মুসলিম হওয়ার আহবান।

আমাদের কর্মসূচীঃ
এক. দাওয়াত ও তাবলীগঃ সর্ব শ্রেণীর মানুষের নিকট ইসলামের প্রকৃত রূপ তুলে ধরে চিন্তার বিশুদ্ধিকরণ ও বিকাশ সাধনের মাধ্যমে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামের অনুসরণ করার অনুভূতি জাগ্রত করা।
দুই. তানযীম ও তারবিয়াতঃ ইসলামকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে অনুসরণে আগ্রহী সৎ ব্যক্তিদেরকে সংগঠিত করা এবং তাদেরকে ইসলামী জ্ঞান প্রদানও আদর্শ চরিত্রবান রূপে গড়ে তুলে জাহিলিয়াতের যাবতীয় চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মী রূপে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ দান করা।
তিন. সমাজ সেবা ও মানব সেবাঃ ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সামাজিক সংশোধননৈতিক পূণর্গঠনসাংস্কৃতিক পরিবর্তন সাধন ও দুঃস্থ মানবতার সেবা করা।

আহবান


আসুনআপনিও বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদের পতাকা তলে সমবেত হয়ে নিজেকে গড়ে তুলুন সুন্দর ও যোগ্যতম মুসলিম হিসেবেশরীক হোন ইহকাল ও পরকালের মুক্তিকামী কাফেলায়। আমীন।



No comments:

Post a Comment

আমার প্রিয় বাংলা বই-এর যে কোন লেখাতে যে কোন ত্রুটি বা অসংগতি পরিলক্ষিত হলে দয়া করে আমাদের লিখুন।