ইসলামী সংগঠনের
যোগ্য সংগঠক
কারো পক্ষে সংগঠক বনে যাওয়া কঠিন কিছু নয়, কিন্তু যোগ্য সংগঠক হওয়া সত্যিই কঠিন। সংগঠনের কিছু রুটিন ওয়ার্ক সম্পন্ন করা খুবই সহজ, কিন্তু সংগঠনে প্রাণ-বন্যা সৃষ্টি করা মোটেই সহজ নয়। সংগঠনে প্রাণ-বন্যা সৃষ্টি করা এবং তা অব্যাহত রাখা একজন যোগ্য সংগঠকের পক্ষেই সম্ভব।
ইসলামী আন্দোলন বা সংগঠনে একজন
যোগ্য সংগঠকের অবস্থান হচ্ছেঃ
- যোগ্য সংগঠক হলেন একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি।
- যোগ্য সংগঠকের প্রতি কর্মী বাহিনী স্বতঃস্ফূর্তভাবে
শ্রদ্ধাবনত থাকে।
- যোগ্য সংগঠককে কড়া নির্দেশ দিয়ে কর্মীদেরকে
কাজে নামানোর প্রয়াস চালাতে হয়না। তাঁর
ইঙ্গিত বা অনুরোধই কর্মীদেরকে কর্মচঞ্চল করার জন্য যথেষ্ট।
- একজন যোগ্য সংগঠক বিভিন্নমুখী যোগ্যতার বিকাশ ঘটিয়ে যোগ্য সংগঠকের স্তরে উন্নীত হন।
ইসলামী আন্দোলন বা সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত
সকলেই কোননা কোন পর্যায়ের দায়িত্বশীল বা পরিচালক। যে অবস্থানে থেকে তাকে প্রতিনিয়ত দ্বীনি আন্দোলনের জিম্মাদারী পালন করে যেতে
হয়। সকলের দায়িত্বের সাথে সংগঠনের স্বাভাবিক
কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি জড়িত বলে তিনি সংগঠকের পর্যায়ভুক্ত হয়ে যান।
একজন সংগঠককে যোগ্য সংগঠকের
ভুমিকায় অবতীর্ণ হতে হলে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য গুলোর অধিকারী হতে হবেঃ
১. জ্ঞানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন।
২. উন্নত ও পরিচ্ছন্ন আমল।
৩. কোমলতা ও বিনয় নম্রতা।
৪. অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী।
৫. ইকামতে দ্বীনের দায়িত্বকে অন্যসব দায়িত্বের
উপর প্রাধান্য দেয়া।
৬. পরামর্শ ভিত্তিক সংগঠন পরিচালনা।
৭. উন্নত মানবীয় গুনাবলীর অধিকারী।
৮. ত্যাগের মহীমায় উজ্জীবিত।
৯. সাংগঠনিক শৃংখলা সংরক্ষণে আপোষহীনতা।
১০. কুন্ঠাহীন জবাবদিহি।
১১. প্রেরণা দায়ক বক্তৃতা ভাষণ।
১২. আমানতের সংরক্ষণ।
১৩. ইসলামী সংগঠনের মূল নীতিমালা সংরক্ষণ।
১৪. নিস্ক্রিয়তার প্রতিকার।
১৫. সর্বপর্যায়ে গতিশীলতা সৃষ্টি।
১৬. যোগ্য উত্তরসূরী সৃষ্টি।
১৭. ইসলামী আন্দোলনের অনিবার্য বাস্তবতা হিসেবে জুলুম-নিপীড়ন কে গ্রহণ করা।
যোগ্য সংগঠকের আরো কতিপয়
বৈশিষ্ট্য থাকা জরুরীঃ
১. ডিক্টেড তথা নির্দেশ দেয়ার মানসিকতা
পরিহার করা।
২. সর্বপর্যায়ে চিন্তার ঐক্য গড়ে তোলা।
৩. জনশক্তির উপর দোষ না চাপানো।
৪. মেজাজের ভারসাম্য রক্ষা করা বা বদ মেজাজ
পরিহার করা।
৫. অপরের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া। বড় ধরনের ক্ষতি না হলে অন্যের মত গ্রহণ করে উৎসাহ দেয়া।
৬. অতিরিক্ত গাম্ভির্যতা পরিহার করা।
৭. সিরিয়াসলি কন্ট্রোল এর মানসিকতা পরিহার
করা।
৮. নিজের যোগ্যতার সকল কিছু উজাড় করে দেওয়া।
৯. স্বৈরাচারী মানসিকতা পরিহার করা।
১০. অন্যকে তার যথাযথ মর্যাদা দেয়া।
১১. স্বজনপ্রীতি পরিহার করা।
১২. সমালোচনা হজমের যোগ্যতা ও সমালোচকদের কদর
করা।
১৩. জনশক্তির অনুপ্রেরণার উৎসস্থল হওয়া।
১৪. আল্লাহর উপর পূর্ণ নির্ভরশীলতা।
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে যথাযথ যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দ্বীনি আন্দোলনের জিম্মাদারী সঠিকভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।।
No comments:
Post a Comment
আমার প্রিয় বাংলা বই-এর যে কোন লেখাতে যে কোন ত্রুটি বা অসংগতি পরিলক্ষিত হলে দয়া করে আমাদের লিখুন।